জরিমানা ও তদন্তের মুখে পড়বে ফেসবুক
ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ কোটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় এই তদন্তের ফলে ফেসবুককে প্রায় ১৬০ কোটি ডলার জরিমানা গুনতে হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের তথ্য সুরক্ষা কমিশন বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে। আয়ারল্যান্ডের কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, এই তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে ফেসবুক জেনারেল ডাটা প্রটেকশন রেগুলেশন (জিডিপিআর) মেনে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা। ইউরোপীয় আইন জিডিপিআর এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যেসব কোম্পানি ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা দিতে ব্যর্থ হয় সেগুলোর বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা শাস্তি দেওয়া হয়। কমিশন বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, ফেসবুক তাদের জানিয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলমান রয়েছে এবং ব্যবহারকারীদের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। ফেসবুকের এক নারী মুখপাত্র জানান, আইরিশ কমিশনটির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের তদন্তে সহযোগিতা করা হবে। আইরিশ তদন্তের ঘোষণার পর স্পেনের তথ্য সুরক্ষা সংস্থাও জানিয়েছে, স্পেনিশ নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার জন্য তারাও তদন্ত করবে। ২৮ সেপ্টেম্বর ফেসবুক জানায়, গত মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমটির ৫ কোটি অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিল। এটাকে ফেসবুক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হ্যাকিংয়ের ঘটনা। স্বতন্ত্র সাইবার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. লুকসাজ ওলেজনিক জানান, জিডিপিআর আইনে এটাই প্রথম বড় তদন্তের ঘটনা। জিডিপিআরের জন্যও এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রটেকচার লিমিটেডের সিনিয়র ডাটা সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ রোয়েনা ফিল্ডিং মনে করেন তদন্ত হলেও ফেসবুক অল্পতেই পার পেয়ে যেতে পারে। আইরিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থার লোকবল ও সামর্থ্য অনেক কম। ফলে ফেসবুক বড় অংকের জরিমানা নিয়ে চিন্তিত না। বিভিন্ন দেশে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, ভুল তথ্য ও বিদ্বেষ ছড়ানো এবং গোপনীয়তা নিয়ে নজরদারির মধ্যেই এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটলো। এই বছরের শুরুর দিকে ফেসবুকের প্রায় ৫ কোটি গ্রাহকের তথ্য চুরির অভিযোগ ওঠে। যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালেটিকা ওই তথ্য নিয়ে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণা চালায় বলে ওই সময় অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সংসদীয় কমিটি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে। এ ছাড়া ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ঘটনাটি ক্ষোভের জন্ম দেয়। ওই ঘটনায় শেয়ারের দরপতনের জেরে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার লোকসানের মুখে পড়ে কোম্পানিটি।